দেশভাগের ঠিক মাস দুয়েক আগে মেয়েটির জন্ম অবিভক্ত বাংলার অবিভক্ত রাজশাহীর শহরে। মেয়েটি যখন পৃথিবীর প্রথম আলো বাতাসে হাত পা মেলে, তখন সেখানকার আকাশ বাতাস, একদিকে যেমন দেশভাগের তীব্র যন্ত্রণার আশঙ্কায় কুঁকড়ে উঠছে, তেমনি আরেকদিকে কৃষক আন্দোলনের এক সর্বোচ্চ পর্যায়কে বুকে ধারণ করে বাংলা ও বাঙালির ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করছে। ... ...
অনেক সময় লেখক নিজের বিপরীত অবস্থানে গিয়েও তো আখ্যান লিখতে পারে। সেক্ষেত্রে লেখকের স্বর আর চরিত্রের স্বর কখনোই এক হবে না। একজন পুরুষ লেখকের কলম যখন নারীর জবানীতে আখ্যান লেখে কিংবা একজন নারী লেখকের কলমে পুরুষ যখন গল্পকথক (প্রোটাগোনিস্ট) হয়ে ওঠে তখন আলাদা করে লেখকের স্বর খুঁজে পাওয়া মুশকিল। লেখক অভিজ্ঞতা, রুচি, আবেগ, পর্যবেক্ষণ, দর্শন, ইতিহাসসহ সংস্কৃতির অগণন সূত্র মিলিয়ে বিপরীত লিঙ্গের চরিত্রটিকে তৈরি করে। চরিত্রটি লেখকের স্বরে নয় ভিন্নস্বরে কথা বলে। আসলে তখন ভাষা কথা বলে। লেখক না। অটো রাইটিং বা স্বতোলিখনে যা রচিত হয় সেটাই টেক্সট হয়ে ওঠে। ভাষা পারফর্ম করতে থাকে, লেখা তৈরি হতে থাকে। অটোম্যাটিক রাইটিং শব্দটা পড়ে মনে হলো- সব লেখাই আসলে অটো রাইটিং। ... ...
মৃণাল সেনের দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে শ্রদ্ধার্ঘ্য ... ...
হারিয়ে যাওয়া রান্না - আমাদের বাড়ির বাইরের দিকটাকে আমরা বাইরবাড়ি বলতাম। বাইরবাড়ির বারান্দা ছিল আমার সবচেয়ে প্রিয় জায়গা। সেখানে ছিল একটি বড় নকশা করা কাঠের বেঞ্চ। সেই বারান্দা আর বেঞ্চ ছিল আশেপাশের সকল বাড়ির মানুষের অবসরে সময় কাটানোর জায়গা। কারণ এই বারান্দাই ছিল সেই পাড়ার সদর জায়গা। ... ...
সত্যপীরের দরগা থেকে ফিরছে বুড়ো আনসার বাওয়াল। ছেলে মন্তেজ এর গায়ে ভর দিয়ে হাঁটছে। ক্লান্ত শরীর। হাতে ধরা লাঠিতে ভর দেয়ার মতো গায়ের জোর নেই। মন্তেজ শেখের হাতের মুঠোয় দরগার বাতাসা। ওর নাতি দুবছরের রাজু বাতাসা খেতে পছন্দ করে। ঘামে ভিজে কাগজে মোড়ানো বাতাসা নরম হয়ে গেছে। দরগায় মানত ছিল আনসার বাওয়ালের। ঘোর বিপাকে পড়ে দরগায় গিয়েছে সে। নইলে বাহাত্তর বছরের শরীর বয়ে অতদূর যাবার কথা নয়। দরগাতে প্রতিদিন আগরবাতি জ্বলে। মুসলমান-হিন্দু নির্বিশেষে ভক্তরা রোগ মুক্তি আর সংসারের মঙ্গল কামনায় শিরনি দেয়। ফুল, ফল আর লুঠ দেয়। ‘হিন্দুর দেবতা আমি মোমিনের পীর, যে যাহা কামনা করে তাহারা হাসিল’- এই পাঁচালীর ভক্তিরসে বাওয়ালী, মৌয়াল, জেলেদের মনে আশা জাগে। সত্যপীরের দয়ায় যদি কোনো উপায় হয়! ... ...
রুমকিনের ছনছন ছাপিয়ে পৃথিবী আজও কান পেত শোনে ইহুদী ঘেটোর সেই আর্তনাদ—‘গিভ মি ইওর চিলড্রেন’। সেই আর্তনাদ যেন মিশছে বস্ত্র শ্রমিকদের ফজরের নামাজে... এটা কি তামাশার লকডাউন? সাধারণ মানুষের মাথায় ঢোকে না। করোনা ভাইরাসের বিস্তার আটকাতে সরকার সব ধরণের চেষ্টা করছে অথচ রাস্তায় মানুষের ঢল। গার্মেন্টস মালিক সংগঠনের সভাপতি জানালেন- রপ্তানীমুখী যেসব প্রতিষ্ঠানে অর্ডার আছে এবং উৎপাদন চলছে, কারখানার মালিকরা সেসব শিল্প কলকারখানা চালু রাখতে পারে। অবশ্যই শ্রমিকদের প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার সাপেক্ষে। এ বক্তব্য শুনে তীব্র ক্ষোভ দানা বাঁধে সাধারণ মানুষের মনে। নানা প্রতিক্রিয়া, মত-অমতে ফেসবুকের নিউজফীড উপচে পড়ে। জল্পনা কল্পনার কারুকাজ চলতে থাকে টিভির টক শো আর নিউজে। ... ...
ঐশ্বর্য নেই, গৌরব নেই। নেই ভাষা, ভাষ্য। তবু এক অধিকার থাকে। এমন এক অধিকার যা থেকে কাউকে বঞ্চিত করা সম্ভব নয়। এটি হলো ছেড়ে যাবার, বিলুপ্ত হবার একান্ত অধিকার। চলে যাবার এই একটি অধিকার আছে বলেই ভূমিস্পর্শ করে শুয়ে আছে কেউ। উপুড় হয়ে। ... ...
এসব খবর-অপখবরের মধ্যে নিউজ পোর্টালের এপে সকাল হয় সবুজ। এখনো এই প্রাচীন নগরে টিকে থাকা কৃষ্ণচূড়ার কোটরে বাসা বাঁধে টিয়ে। বৃষ্টিতে হয় তার সবুজ স্নান। মনে পড়ে প্রাথমিকের সেই গান : একদিন সূর্যের ভোর, একদিন স্বপ্নের ভোর, একদিন সত্যের ভোর আসবে, এই মনে আছে বিশ্বাস, আমরা করি বিশ্বাস, সত্যের ভোর আসবে একদিন...। ... ...
চোতমারানির পোলারা চুদতেও পারে না। আক্রোশটা খিস্তিখেউড়ে পরিণত হয়ে ঝনঝন করে ভেঙে পড়ছিল। ঘটনাটার ফলাফল তখন সবেমাত্র সে টের পায়। তলপেট থেকে যখন টক জলের ঘূর্ণি গা কাঁপিয়ে বাইরে এসে পড়ে। কলতলায় যাবার সু্যোগ দেয় না। দরজার বাইরে বসে সে হাঁপায় আর শরীরের সমস্ত শক্তি একাট্টা করে গালি দেয়। ... ...
শেষ বিকেলের আলোয় ডলি রাখাইনের ফর্সা কচিপানা মুখে লালচে আভা। কণ্ঠস্বর বাস্পরূদ্ধ, যেন অস্পষ্ট থেকে অস্পষ্ট হতে থাকে, আচ্ছা, বিপ্লব দা, আপনার তো ঢাকায় অনেক টাকার চাকরি! এ রকম একটা বাড়ি সস্তায় কিনতে পারেন? মানবিক লোকজন এসবের দখল নিলে রাখাইন মালিকটি দেশান্তরে গিয়েও অন্তত নিশ্চিন্ত যে, যাক, পূর্বপুরুষের ভিটেমাটির নিশানাটুকু তো টিকে থাকবে, সেটুকু তো আর একেবারে নিশ্চিহ্ন হচ্ছে না! … ... ...
ইউনিকোডে বাংলা যুক্ত হওয়ায় ইন্টারনেটে দ্রুত প্রসার হচ্ছে বাংলার। অভ্র’ ও উইন্ডোজ সেভেন এই কাজকে করেছে আরো সহজ। আর কম্পিউটারের উইন্ডোজ সেভেন ভার্সন থেকে শুরু করে পরের সবগুলো ভার্সনে বাংলা দেখার জন্য আলাদাভাবে প্রয়োজন নেই বাংলা কনফিগারেশনের। এ ছাড়া ব্রাউজিং সফটওয়্যার ফায়ারফক্সেও এখন যুক্ত হয়েছে অভ্র’। প্রযুক্তির ছোঁয়ায় বিভিন্ন ধরনের কম্পিউটার থেকে তো বটেই, এমনকি মোবাইল ফোনেও সম্ভব হয়েছে বাংলায় লেখাপড়ার কাজ। ... ...